ঢাকা ০৮:৫৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলাদেশ :
Logo ফিলিস্তিনে ইসরাইলের হামলার বিরুদ্ধে বকুলবাড়িয়ায় বিক্ষোভ মিছিল Logo নড়াইলের লোহাগড়ায় জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার চেয়ারম্যান ও গণ অধিকার পরিষদের ইফতার ও আলোচনা সভা Logo কবিতা : ভিন্নরূপে নারী Logo ফ্যাসিস্ট মনোভাব ও অবৈধ টাকায় শান্তি আসে না : কর্নেল হক Logo জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা ফুল দিয়ে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালেন গণঅধিকারের পরিষদের সভাপতি ভিপি নুরুল হক নূর কে Logo কবিতা: আযাব থেকে মুক্তি Logo কবিতা: বই ঘ্রাণে Logo কবিতা: বঙ্গ জয়ী জিয়া Logo কবিতাঃ পুরুষ প্রিয়জন নয় Logo কবিতাঃ কান পেতে শুনে নিও Logo তুমিই কবিতা Logo চাঁদপুরে অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ Logo বেলনা ৭নং ওয়ার্ড এর এলাকাবাসী ইসকনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও মিছিল Logo জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার নামে কামরুল ও রাসেল সরকারের প্রতারণা Logo জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার উপদেষ্টা হলেন খাজা ওসমান ফারুকী সুফি স্পিরিচুয়াল ফাউন্ডেশন-এর প্রতিষ্ঠাতা  Logo ২৪ ঘন্টার মধ্যে পাসপোর্ট অফিসের আওয়ামী ফ্যাসিবাদী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে- কৃষিবিদ মোঃ শহিদুল ইসলাম ফাহিম Logo ধনবাড়ী উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বাজার দর পর্যবেক্ষণ Logo খেলাফত রাষ্ট্রব্যবস্থা জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মানবজাতির নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে: মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক Logo কবিতা : আশ্বিনা বৃষ্টি Logo কবিতা : মুগ্ধ নামের ছেলেটি

ফয়সালের মাছের আঁশ বিক্রি করে বাৎসরিক আয় আয় ৭ লাখ টাকা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৩১:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৪ ১৯০ বার পড়া হয়েছে

মাছের আঁশ সাধারণত একসময় ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হতো। কিন্তু বর্তমানে সেই ফেলে দেওয়া অংশ সংগ্রহ করে প্রক্রিয়াজাতের মধ্যে দিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে বাড়তি আয় করা হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জ থেকেও মাছের আঁশ সংগ্রহ করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাছের আঁশ নিয়ে কার্যক্রম চললেও নারায়ণগঞ্জে এখনো এ কাজ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েনি। শহরে মাছের আঁশ বিক্রি করে বাড়তি টাকা আয় করার মধ্যে একজন আমলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা ফয়সাল। কয়েকমাস ধরে তিনি নারায়ণগঞ্জ থেকে মাছের আঁশ বিক্রি করছেন। প্রতিদিন শহরের লঞ্চঘাট সংলগ্ন মাছঘাটের মাছকাটা শ্রমিকদের কাছ থেকে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ কেজি আঁশ সংগ্রহ করেন।

ফয়সাল জানান, এসকল আঁশ রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছে সরবরাহ করেন। প্রতিকেজি আঁশ ২০ টাকা ৩৫ টাকা ধরে বিক্রি করে থাকেন। যা বিক্রি করে প্রতিদিন দুই হাজার থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকা এবং মাস শেষে প্রায় ৬০ হাজার ৭০ হাজার টাকা পাওয়া যায়। বছর শেষে বিক্রির পরিমাণ হয় প্রায় সাত থেকে আট লাখ টাকা।

জানা যায়, ফয়সাল একসময় প্রবাসী ছিলেন। বিদেশ থেকে দেশে ফিরে বিভিন্ন ব্যবসার সাথে যুক্ত হন। তার বিভিন্ন ব্যবসার মধ্যে মাছের আঁশ একটি। আগে তার বাবা আতাউর রহমান এ ব্যবসা করতেন। কিন্তু তিনি অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় এখন থেকে ফয়সাল এ ব্যবসা দেখাশোনা করেন।

মাছঘাটের মাছকাটা শ্রমিক আশিক বলেন, মাছঘাটে আমরা প্রায় ১২ থেকে ১৫ জন মাছ কেটে থাকি। মাছকাটার জন্য প্রতিদিন বটি ভাড়া নিতে হয়। এই বটি আমরা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার বিনিময়ে ভাড়া নিয়ে থাকি। সেই সঙ্গে আমাদের কাছে জমে থাকা মাছের আঁশ ফয়সাল ভাই লোক মাধ্যমে সংগ্রহ করে থাকেন। দিনশেষে তিনি এসব মাছের আঁশ ঢাকার বড় ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন।

ফয়সাল বলেন, মাছঘাটের ইজারাদারদের কাছ থেকে মাছকাটা ইজারা নিতে হয়েছে। সেই সঙ্গে আমার কাছ থেকে প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার বিনিময়ে বটি ভাড়া নিয়ে মাছ কেটে থাকেন মাছকাটা শ্রমিকরা। এরপর মাছকাটা শ্রমিকদের কাছে যে আঁশ জমে থাকে সেটা আমি লোকের মাধ্যমে সংগ্রহ করে থাকি। এরপর এই মাছের আঁশ ঢাকার ব্যবসায়ীদের কাছে কেজি দরে বিক্রি করে থাকি।

তিনি আরও বলেন, মাছের আঁশ প্রক্রিয়াজাত করার মধ্য দিয়ে একের পর এক হাত বদল হয়ে বিদেশে রপ্তানি করা হয়। নারায়ণগঞ্জে মাছের আঁশ শুকানোর ব্যবস্থা করতে পারলে আরও বেশি টাকা আয় করা যেতো। কিন্তু জায়গার অভাবে মাছের আঁশ শোকানো সম্ভব হয় না। ফলে কম লাভেই মাছের আঁশ বিক্রি করতে হয়। মাছের আঁশ বিক্রির টাকা দিয়েই মাছকাটার ইজারার টাকা পূরণ করতে হয়। অন্যথায় ইজারা নিয়ে লাভবান হওয়া যেতো না।

ফয়সালের বাবা আতাউর রহমান বলেন, আমি অনেকদিন ধরেই এই মাছঘাটের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। আগে ঘাটের ইজারা নিতাম। এখন ইজারা নেওয়ার সামর্থ্য নেই। গত বছর থেকে মাছকাটার ইজারা নিয়েছি। মাছকাটা শ্রমিকদের কাছ থেকে মাছের আঁশ বিক্রি করে কিছু টাকা আয় করা যায়। আমার বয়স হয়ে যাওয়ায় এখন আমার ছেলেই ব্যবসাটা দেখাশোনা করে থাকেন।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. ফজলুল কাবীর বলেন, আমরা মাছের আঁশ সংগ্রহের বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখবো। তবে যদি কেউ এ ব্যপারে সহযোগিতা চেয়ে থেকে তাহলে আমরা কারিগরি সুযোগ সুবিধা দিতে পারবো। আশা করি আমাদের সহযোগিতার মাধ্যমে তিনি আরও বেশি লাভবান হতে পারবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ফয়সালের মাছের আঁশ বিক্রি করে বাৎসরিক আয় আয় ৭ লাখ টাকা

আপডেট সময় : ০৯:৩১:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৪

মাছের আঁশ সাধারণত একসময় ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হতো। কিন্তু বর্তমানে সেই ফেলে দেওয়া অংশ সংগ্রহ করে প্রক্রিয়াজাতের মধ্যে দিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে বাড়তি আয় করা হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জ থেকেও মাছের আঁশ সংগ্রহ করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাছের আঁশ নিয়ে কার্যক্রম চললেও নারায়ণগঞ্জে এখনো এ কাজ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েনি। শহরে মাছের আঁশ বিক্রি করে বাড়তি টাকা আয় করার মধ্যে একজন আমলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা ফয়সাল। কয়েকমাস ধরে তিনি নারায়ণগঞ্জ থেকে মাছের আঁশ বিক্রি করছেন। প্রতিদিন শহরের লঞ্চঘাট সংলগ্ন মাছঘাটের মাছকাটা শ্রমিকদের কাছ থেকে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ কেজি আঁশ সংগ্রহ করেন।

ফয়সাল জানান, এসকল আঁশ রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছে সরবরাহ করেন। প্রতিকেজি আঁশ ২০ টাকা ৩৫ টাকা ধরে বিক্রি করে থাকেন। যা বিক্রি করে প্রতিদিন দুই হাজার থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকা এবং মাস শেষে প্রায় ৬০ হাজার ৭০ হাজার টাকা পাওয়া যায়। বছর শেষে বিক্রির পরিমাণ হয় প্রায় সাত থেকে আট লাখ টাকা।

জানা যায়, ফয়সাল একসময় প্রবাসী ছিলেন। বিদেশ থেকে দেশে ফিরে বিভিন্ন ব্যবসার সাথে যুক্ত হন। তার বিভিন্ন ব্যবসার মধ্যে মাছের আঁশ একটি। আগে তার বাবা আতাউর রহমান এ ব্যবসা করতেন। কিন্তু তিনি অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় এখন থেকে ফয়সাল এ ব্যবসা দেখাশোনা করেন।

মাছঘাটের মাছকাটা শ্রমিক আশিক বলেন, মাছঘাটে আমরা প্রায় ১২ থেকে ১৫ জন মাছ কেটে থাকি। মাছকাটার জন্য প্রতিদিন বটি ভাড়া নিতে হয়। এই বটি আমরা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার বিনিময়ে ভাড়া নিয়ে থাকি। সেই সঙ্গে আমাদের কাছে জমে থাকা মাছের আঁশ ফয়সাল ভাই লোক মাধ্যমে সংগ্রহ করে থাকেন। দিনশেষে তিনি এসব মাছের আঁশ ঢাকার বড় ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন।

ফয়সাল বলেন, মাছঘাটের ইজারাদারদের কাছ থেকে মাছকাটা ইজারা নিতে হয়েছে। সেই সঙ্গে আমার কাছ থেকে প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার বিনিময়ে বটি ভাড়া নিয়ে মাছ কেটে থাকেন মাছকাটা শ্রমিকরা। এরপর মাছকাটা শ্রমিকদের কাছে যে আঁশ জমে থাকে সেটা আমি লোকের মাধ্যমে সংগ্রহ করে থাকি। এরপর এই মাছের আঁশ ঢাকার ব্যবসায়ীদের কাছে কেজি দরে বিক্রি করে থাকি।

তিনি আরও বলেন, মাছের আঁশ প্রক্রিয়াজাত করার মধ্য দিয়ে একের পর এক হাত বদল হয়ে বিদেশে রপ্তানি করা হয়। নারায়ণগঞ্জে মাছের আঁশ শুকানোর ব্যবস্থা করতে পারলে আরও বেশি টাকা আয় করা যেতো। কিন্তু জায়গার অভাবে মাছের আঁশ শোকানো সম্ভব হয় না। ফলে কম লাভেই মাছের আঁশ বিক্রি করতে হয়। মাছের আঁশ বিক্রির টাকা দিয়েই মাছকাটার ইজারার টাকা পূরণ করতে হয়। অন্যথায় ইজারা নিয়ে লাভবান হওয়া যেতো না।

ফয়সালের বাবা আতাউর রহমান বলেন, আমি অনেকদিন ধরেই এই মাছঘাটের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। আগে ঘাটের ইজারা নিতাম। এখন ইজারা নেওয়ার সামর্থ্য নেই। গত বছর থেকে মাছকাটার ইজারা নিয়েছি। মাছকাটা শ্রমিকদের কাছ থেকে মাছের আঁশ বিক্রি করে কিছু টাকা আয় করা যায়। আমার বয়স হয়ে যাওয়ায় এখন আমার ছেলেই ব্যবসাটা দেখাশোনা করে থাকেন।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. ফজলুল কাবীর বলেন, আমরা মাছের আঁশ সংগ্রহের বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখবো। তবে যদি কেউ এ ব্যপারে সহযোগিতা চেয়ে থেকে তাহলে আমরা কারিগরি সুযোগ সুবিধা দিতে পারবো। আশা করি আমাদের সহযোগিতার মাধ্যমে তিনি আরও বেশি লাভবান হতে পারবেন।