আমি প্রশাসনকে সরাসরি কিছু বলতে পারি না: শামীম ওসমান

- আপডেট সময় : ০৬:২৮:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৪ ১৬৪ বার পড়া হয়েছে

নারায়ণগঞ্জ’র প্রভাবশালী সংসদ সদস্য শামীম ওসমান প্রশাসনের উপর অনেকাটা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন আমি প্রশাসনকে সরাসরি কিছু বলতে পারি না। আমার ছোট বোন আইভি বলে ফেলে। তিনি কিছুদিন আগে ফুটপাত থেকে টাকা কমায় প্রশাসন এটা সরাসরি বলেন। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) ফতুল্লা থানাধীন ইসদাইর ওসমানী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ইভটিজিং ও ভূমিদস্যুতা মুক্ত সমাজ গড়তে অরাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন ‘প্রত্যাশা’র মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় শামীম ওসমান বলেন, আমি আমার রাজনৈতিক জীবনে এত বিব্রত কখনও হই নাই। আমি আমার ছোট বোনের মত কথা বলতে পারবো না যে, এখানে প্রশাসন টাকা কামাতে আসে। আমি এভাবে বলতে চাই না। আমি একটা কথা বলতে চাই। আমি জেলা প্রশাসককে বার বার বলেছি। আমার উদ্যোগ নিয়ে কেবিনেট, প্রধানমন্ত্রীর সচিব, সেক্রেটারী, খোদ স্বররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, যে উদ্যোগ নিয়েছি তা পুরো বাংলাদেশে নেয়া হলে দেশ পাল্টে যাবে। যেভাবে দাওয়াত দেওয়া যায়, তার চাইতে সুন্দরভাবে দাওয়াত দিয়েছি। তারা আসেন নাই। ৪০ বছরেও এমন আয়োজন কখনও হয় নাই। শিক্ষক, সাংবাদিক, আইনজীবী, বুদ্ধিজীবী সকল শ্রেণীর সকল ধর্মের মানুষ এসেছেন। আমার এখন কি করণীয় আমি পরামর্শ চাই জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাইয়ের নিকট। উনি আমার চেয়ে অনেক সিনিয়র।
তিনি আরও বলেন, ওয়ারেন্ট অফ প্রেসিডেন্সি, আমার একটা সংসদ সদস্য হওয়ার অবস্থান ঠিক কোথায় তা জেলা প্রশাসনের হয়ত অনেকেই বুঝে না। নির্বাচনের আগে শামীম ওসমান কিন্তু কাউকে ফোন দেয় নাই। আপনারা মনে রাখবেন, আমার নাম শামীম ওসমান, কারও দোহাইতে চলি না। শামীম ওসমান কারও দয়া-দাক্ষিণ্যে চলে না। রাজপথ থেকে সৃষ্টি হওয়া মানুষ, রাজপথেই শেষ হবো। আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছে প্রশাসন থেকে কেউ আসে নাই, তারা কেন আসে নাই। আমি শামীম ওসমান জীবিত থাকলে জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে পার্লামেন্টে জিজ্ঞাসা করবো প্রধানমন্ত্রীর কাছে, তারা জনগণের সেবক হিসেবে চাকুরী করতে নারায়ণগঞ্জে এসেছেনে।
আজকে তারা অনুপস্থিত কেন। আমি মাথা নোয়ানোর মানুষ না, এমন কাজ করি না যে আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করি না। টাকার বস্তা ধরে যাত্রাবাড়ীতে আর কেস করেন ফতুল্লায়। অনেক কিছুর খবরই আছে আমাদের কাছে। এই কথা আজ বলার ছিল না। অনেক জনপ্রতিনিধি আজ এসেছেন। তারা হতাশ হয়ে আছেন। হতাশ হবেন না, এটা আমাদের নারায়ণগঞ্জ। আমরাই ঠিক করবো। ফেব্রুয়ারিতে সংসদ বসবে, আমি আমার প্রশ্ন করবো। জানতে চাইবো জনপ্রশাসন মন্ত্রী, সররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন করবো, দাওয়াত কবুলের পর কার নির্দেশে আসে নাই আজ। আপনারা দুশচিন্তায় থাকবেন না। আমাদের আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, উনি কারও কাছে মাথা নত করেন না। আমরা উনার কর্মী হিসেবে কারও কাছে মাতা নত করবো না।
সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি চন্দন শীল, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল (ভিপি বাদল), মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, বিকেএমইএ-এর নির্বাহী সভাপতি ও বিশিষ্ট শিল্পপতি মোহাম্মদ হাতেম, ইয়ান মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি লিটন সাহা, জেলা কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি প্রবীর কুমার সাহা, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. হাসান ফেরদৌস জুয়েল, নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সভাপতি তানভীর আহম্মেদ টিটু, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুস সালাম, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব সভাপতি আরিফ আলম দিপু, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন সহ বিভিন্ন শিক্ষক, আইনজীবী, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদবৃন্দ।
সভা শেষে মেডিক্যাল ক্যাম্প করে দুস্থ অসহায় মানুষদের চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয় এবং গরীব ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ায় আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হয়।