ভালোবাসার নকশী কাঁথা

- আপডেট সময় : ০৫:৫৭:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ মার্চ ২০২৪ ১২৬ বার পড়া হয়েছে

বিজুরী ইসলাম,রাইটার: নকশী কাঁথা এক প্রকার শিল্প। এক সময় নকশী কাঁথা প্রায় ঘরে ঘরে তৈরি করা হতো। আমার মা, বোন, ভাবীরাও খাওয়া-দাওয়ার পর ক্লান্ত দুপুরে সব কাজ সেরে ঘরের মেঝে, বারান্দা বা গাছের ছায়ায় মাদুর পেতে বসত নকশী কাঁথা নিয়ে।
গ্ৰামীন ঐত্যিহের অবিচ্ছেদ্য অংশ নকশী কাঁথা। কেবল সুই আর সুতোর কারুকাজ নয়,এ যেন চিরন্তন বাঙালির ভালোবাসার গল্প। সুঁচের ফোঁড়ে আর বাহারি রঙের সুতোয় বিভিন্ন নকশা স্হান করে নেয় নকশী কাঁথা। মা, বোনদের দেখেছি মনের মাধুরী মিশিয়ে তৈরি করেন এসব কাঁথা। যেখানে নতুন আর পুরানো কাপড়ে তৈরি এসব কাঁথার সুঁচের ফোঁড়ে ভালো বাসা মিশে আছে।
তবে কালের বিবর্তনে নকশী কাঁথা এখন অনেক টা বিলীনের পথে। সময় ওপরিশ্রম বেশি হওয়ায় এবং মজুরি কম পাওয়ায় নকশী কাঁথা তৈরিতে গ্ৰামের নারীরা অনেকটাই বিমুখ হচ্ছেন। কোন ধরনের প্রশিক্ষণ ছাড়াই গ্ৰামের মহিলারা নকশী কাঁথা তৈরি করছেন। এক একটি নকশী কাঁথা তৈরি করতে কখনো কখনো প্রায় এক বছর সময় লেগে যায়। সুঁইয়ের প্রতিটি ফোঁড়ে তৈরি করে এক একটি না বলা কথা। কতশত ইতিহাস আর গল্প। তখন গর্ব বোধ হয়। দেশের মাটির গন্ধ মাখা, গল্প গাঁথা মমতায় ঘেরা। প্রতিটি নকশী কাঁথার পিছনে কত শ্রম আর কত স্বপ্ন বুনে চলেছেন গ্রাম বাংলার নারীরা।
উপহার হিসেবেও নকশী কাঁথা খুব ভালো প্রচলন আছে । বাঙালি সংস্কৃতির ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে আজও মেয়ের বিয়েতে মা এমন মায়া মমতায় জড়ানো নকশী কাঁথা উপহার দেন । এই ধারা অব্যাহত থাকবে যুগযুগান্তর। ইতিহাস সাক্ষী হয়ে আছে ।
নতুন করে ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে আরো কত কাহিনী । আমার বিয়েতে উপহার পেয়েছি আমার মায়ের কাছ থেকে । আমার শাশুড়ি ও আমাকে উপহার দিয়েছেন লাল কাপড়ের উপর রংবেরঙের লাল সুতার ভালোবাসায় গাঁথা ২টা নকশী কাঁথা।